শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন
চৌদ্দগ্রাম প্রতিনিধিঃ
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে পন্ড হয়ে গেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথদিঘীর বড়শী প্রতিযোগিতা। ২৪ ঘন্টার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ২৮ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হয় কয়েকশত টিকেট।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) ভোর থেকে পূর্ব নির্ধারিত প্রতিযোগিতার দিনে বাস ট্রাক পিকআপ ও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে হাজির হন বিভিন্ন শ্রেণী প্রেশার মানুষ। দেশের ভিবিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বড়শী প্রেমীরা ফিরে যান হতাশা নিয়ে।
জানা যায়, কুমিল্লার জেলার সবচাইতে বড় দীঘি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত জগন্নাথদিঘীর সব মাছ লুট হয়ে যায়। এরপর নতুন ইজারা পায় চিওড়া মৎস্য সমিতি। সম্প্রতি তারা বড়শী দিয়ে মাছ ধরার প্রতিযোগিতার ঘোষণা দিয়ে টিকিট বিক্রি করে।
গত সপ্তাহে ইজারাদার চিওড়া মৎস্য সমিতির কয়েকজন সদস্যসহ স্থানীয়রা মাছ শূণ্য দীঘিতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারাসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রতিযোগিতা বন্ধে মানববন্ধন করে। আজ (শুক্রবার) প্রতিযোগিতার নির্ধারিত দিনে দেশের প্রান্ত থেকে টিকেট ক্রয় করা মৎস্য শিকারীরা উপস্থিত হয়। এরপর দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মহাসড়ক ঘেঁষা কুমিল্লা জেলার সবচাইতে বড় এই দীঘির আশপাশে। টিকেট ক্রয়ের টাকা ফেরত চেয়ে আয়োজকদের সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা।
অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে যান দীঘির ইজারাদার ও আয়োজক ফখরুল ইসলাম ফয়সাল। মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ ও হরেকরকম চিপ নিয়ে আসা সৌখিন মৎস শিকারীরা দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে বাধ্য হন ফিরে যেতে। এতে প্রতারণা ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হন তারা।
ফেনীর সোনাগাজী থেকে আসা আতা উল্যাহ জানান, আমি পিকআপ রিজার্ভ করে ৩ হাজার টাকা হারে ভাড়া করে ৫ জন অভিজ্ঞ মাছ শিকারী নিয়ে আসছিলাম এখানে মাছ ধরতে। গতকাল রাতেও আয়োজক ফয়সাল ফোন করে বলেছিল সকাল সকাল যেন চলে আসি। কিন্তু এসেতো হতাশা ছাড়া কিছুই পেলাম না। শূন্য হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে এখান থেকে।
কিশোরগঞ্জ থেকে আসা শাকিল জানায়, আমি পুরো ২৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে টিকেট কনফার্ম করে অনেক সখ করে আমরা ৫ বন্ধু মাছ শিকার করতে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে যে আমাদের সাথে এমন প্রতারণা করা হচ্ছে তা জানতাম না। আমি দুপুর ১২ টার দিকে আমার টিকেটের টাকা আয়োজক ফয়সালের কাছে ফেরত চাইলে সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং কোন টাকা ফেরত দিবে বলে জানিয়ে দেয়। কিন্তু আমিতো এখানে অচেনা মানুষ জোর করে তো আর আমার টাকা আদায় করতে পারবো না। তাই মনের দু:খে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
আয়োজক ফখরুল ইসলাম প্রকাশ ফয়সালের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে জানতে চাইলেও তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গিয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই অভিজিৎ বলেন, জগন্নাথদিঘীর লিজ নেওয়া সমিতির দু’পক্ষের উত্তেজনার খবর পেয়ে আমি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। তাদের দ্বন্দ্বের জেরে বড়শি প্রতিযোগীতা হয়নি। সার্বিক পরিস্থিতি শান্তই ছিলো অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জামাল হোসেন জানান, আমি সারাদিন ২ জন উপদেষ্টার সফরকৃত অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলাম। দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে জগন্নাথ দিঘীতে বড়শি প্রতিযোগীতা হয়নি বলে জানতে পেরেছি। তবে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন হওয়ার মত কোন ঘটনা ঘটেনি।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১২-০৬৮৯৫৩